নাভিকুণ্ড
-সুমিত মোদক
ফুলেদের মৃতদেহগুলো সরিয়ে সরিয়ে উঠে আসছে
আমারই মৃতদেহ ;
শেষ বারের মতো শুনে নিতে চাচ্ছি রাগ
বসন্ত-বাহার;
দলে দলে উড়ে আসে রঙবেরঙের প্রজাপতি,
আমার বিমূর্ত চিত্র সকল;
আধখানা উঠান কোনও দিনের জন্য ধরে রাখতে পারেনি;
অথচ, রাঙামাটির পথ পায়ে পরিয়ে দিয়েছে ঘুঙুর;
উত্তরের বাতাস বইতে শুরু করলে
এক এক করে নেমে আসে ঘুমপরী;
সেই কবে ছেলেবেলায় ডানা দুটো দিয়ে গেছে
মনে পড়ে না আজ;
কেবল সারাটা জীবন সে ডানায় ভর দিয়ে উড়ে গেছি হৃদয়ে হৃদয়ে;
আবার বার বার ভেঙেছি সে হৃদয়;
বহু দিন আগে একটা গাছ বসিয়ে ছিলাম উঠানে;
সেটা ফল দেয়, পাখি এসে বসে রাত-দিন;
প্রতি রাতে উড়ে আসে রাত-পাখি এক;
শুনিয়ে যায় গভীর রাতের স্বরলিপি;
প্রতিবেশী মেয়েটি, যে কি না রূপকথার গল্প-বয়সে রাজকন্যা হয়ে উঠে ছিল,
সেও এ বয়সে এসে হাজির হল বুকের ভিতর;
ভিতরে ভিতরে জমা হয় অভিসার;
মৃত ফুলগুলোর পাপড়ি মেলে দিয়েছিল আমারই মৃত শরীরের উপর;
সেগুলো সরিয়ে সরিয়ে খুঁজে নিচ্ছি নাভিকুণ্ড,
সময়ের জন্মান্তর;
উত্তরের বাতাসে বাতাসে ভেসে বেড়ায়
রাঙামাটির ঘুঙুর,
আমারই উত্তর পুরুষের পদধ্বনি।